টাফনিল ট্যাবলেট সেবনের উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
টাফনিল ট্যাবলেট সেবনের উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
টাফনিল ট্যাবলেট সেবনের উপকারিতা কি?এই ট্যাবলেট কেন খাবেন এটি
জানতে গুগুলে সার্চ করেছেন?তাহলে পাঠক আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন।আজ এই
কন্টেন্ট এ আমি টাফনিল এর উপকারিতা,এটি কোন রোগের ঔষধ এবং এর
ব্যাবহার বিধি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।
টাফনিল মূলত অস্টেরয়েডাল বিরোধী প্রদাহী ড্রাগ যা শরীরের বিভিন্ন হরমোন গুলোকে
নিয়ন্ত্রনে এনে দেহের ব্যাথা ও প্রদাহ উপশম করে।তাহলে চলুন টাফনিল এর ব্যাবহার
সম্পর্কে আরো জেনে নেই।
পেজ সূচিপত্রঃ
- টাফনিল ট্যাবলেট কি ধরনের ঔষধ?
- এটি কোন কোন রোগে ব্যাবহার করা হয়?
- এটির ব্যাবহার বিধি ও উপকারীতা
- এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কেমন?
-
এটি খেলে ঝিমুনি বা ঘোর ভাব দেখা দিতে পারে কি?
-
রোগীদের জন্য কিছু সতর্কতা
-
টাফনিল ট্যাবলেট এর দাম ২০২৫
-
কারা ট্যাবলেট সেবন করতে পারবেন না
-
এটি ব্যবহারে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ কেন নিবেন?
- টাফনিল ট্যাবলেট সেবনের উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-শেষ কথা
টাফনিল ট্যাবলেট কি ধরনের ঔষধ?
টলফেনামিক এসিড (C14H12CINO2) এম ফেনামেট গ্রুপের সদস্য। আমাদের শরীরে
প্রদাহ সৃষ্টিকারী এনজাইমের বিরুদ্ধে এটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা করে তোলে। তীব্র
মাইগ্রেনের ব্যথা ,পোস্ট অপারেটিভ ব্যথা মাথার একপাশে ব্যথা ,ইত্যাদি বিভিন্ন
ধরনের প্রদাহের প্রতিরোধে এটা ব্যবহার করা হয়। মূলত এটা ব্যথা নাশক
ঔষধ।প্রোস্ট্রাগ্লান্ডিন আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা তৈরী করে। টাফনিল
ট্যাব্লেট এর মধ্যে উপস্থিত রাসায়নিক এঞ্জাইম এখানে সক্রিয় ভাবে বাধা দেয় এবং
ব্যাথার মাত্রা কমিয়ে আনে।
তীব্র থেকে মাঝারি ধরনের মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন জাতীয় সমস্যার ক্ষেত্রে
অধিকাংশ ডাক্তার টাফনিল ট্যাবলেট টি সাজেস্ট করে থাকেন। কিছু কিছু মানুষের
ক্ষেত্রে মাথার এক পাশ ব্যথা করে তারা এই ওষুধটি সেবন করতে পারেন। গবেষণায় দেখা
গিয়েছে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের মাথা ব্যথার হার তিনগুণ বেশি।
এটি কোন কোন রোগে ব্যাবহার করা হয়?
টাফনিল ট্যাবলেট SKF কোম্পানির একটি পণ্য। মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন ব্যাথা,
দাঁতের ব্যথা, অপারেশন পরবর্তী ব্যথা , আর্থাইটিসের কারনে, অতিরিক্ত
দুশ্চিন্তার ফলে,মাসিকের ব্যাথা,স্নায়বিক ব্যাথা ইত্যাদি রোগে ডাক্তারের ওষুধ
সাজেস্ট করে থাকেন।
এটির ব্যাবহার বিধি ও উপকারীতা
এই ওষুধটি দিনে এক থেকে দুইবার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া যেতে পারে তবে
যাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই ভরা পেটে এটি খেয়ে থাকবেন এবং
একটি ট্যাবলেট খাওয়ার পর যদি ব্যথা না কমে তাহলে একঘন্টা পর আর একটা ট্যাবলেট
খেতে পারেন।
- তীব্র মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে ২০০mg (২৪ ঘন্টার ভিতর সর্বোচ্চ দুই বার তাও এক ঘন্টা পর)
-
হালকা থেকে মাঝারি পর্যায়ের মাথাব্যথার ক্ষেত্রে ১০০-২০০mg তিনবার
-
কিডনির সমস্যা থাকলে বা কার্যকারিতা অস্বাভাবিকতা হলে এড়িয়ে চলুন
এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কেমন?
আমরা জানি যে প্রত্যেকটা ওষুধের কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা সাইড
ইফেক্টস থাকেই ।এটি এক এক রোগীর ক্ষেত্রে এক এক রকম হতে পারে।তবে ওষুধ সেবনের
পূর্বে এগুলো ব্যাপারে সতর্কতা থাকা ভালো ।যাদের অ্যালার্জির প্রবলেম অনেক বেশি
বা ত্বক অনেক বেশি সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল তারা যে কোন ওষুধ সেবনের আগে পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া গুলোর দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
- বিশেষ করে পুরুষদের ডিসইউরিয়া
- ডায়রিয়া
- বমি বমি ভাব
- এপি গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা
- ক্ষুধামন্দা
- ইরিদমিয়া
- মাথা ঘোরা
- পেটে ব্যথা
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
- কাঁপুনি শিহরণ
- ক্লান্তি
- শ্বাসনালীতে অনুপ্রবেশ
- মূত্রের রং পরিবর্তন হওয়া
- রক্তের উপাদান গুলোর মারাত্মক হ্রাস বৃদ্ধি ঘটতে পারে
- হেপাটাইটিস হতে পারে
- কোমা
এটি খেলে ঝিমুনি বা ঘোর ভাব দেখা দিতে পারে কি?
যেহেতু এটা একটা ব্যথা নাশক ওষুধ এতে উপস্থিত রাসায়নিক পদার্থ এই রিএকশনে
শরীরে ঝিমুনি বা ঘোর ভাব দেখা দেয়।সাধারনত ওষুধের ভেতরে থাকা বিভিন্ন উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা অনেকাংশে কমিয়ে ফেলতে পারে।এছাড়া ঔষধ গ্রহনের ডোজ বা মাত্রা,ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা,একি সাথে অন্যান্য ওষুধ গ্রহন এর ফলে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া দেখা দিতে পারে যার ফলে একজন রোগীর ঝিমুনি বা ঘোর ভাব অনূভূত হতে পারে।ব্যাথা নাশক,ঘুমের ওষুধ,এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ শরীরে ঘোর ভাব সৃষ্টি করে।
এছাড়া কিডনীর দুর্বলতা, লিভারের অসুবিধা এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের কারণে ওষুধের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা তৈরি হয় যার কারণে রোগীর ঝিমুনি বা ঘোর ভাব সৃষ্টি হতে পারে।এজন্য যেকোন ওষুধের ডোজ বাড়ানো বা কমানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
রোগীদের জন্য কিছু সতর্কতা
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা পেটে আলসার থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারে অবশ্যই
সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভবতীর কিংবা স্তন্যদানকারী মায়েদের অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে শিশুদের জন্য এটার সঠিক ডোজ
এখন পর্যন্ত প্রকাশ হয়নি।কিডনি বা লিভার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই ওষুধ সেবন
করা একদম উচিত নয়। শিশুদের জন্যই ট্যাবলেট প্রযোজ্য নয়।
টাফনিল ট্যাবলেট এর দাম ২০২৫
টাফনিল ট্যাবলেটের প্রতি পিসের দাম ১০ টাকা এবং একটি স্ট্রিপ এর দাম ১০০ টাকা ।
একটা স্ট্রিপ এ মোট দশটা করে বড়ি থাকে। আপনি চাইলে স্ট্রিপ আকারো কিনতে
পারেন আবার বড়ি হিসেবেও কিনে নিতে পারেন।
কারা ট্যাবলেট সেবন করতে পারবেন না
এজমা, রক্তপাত জনিত সমস্যা,হৃদ সংবহন তন্ত্রের বিভিন্ন রোগ, ব্রাসকম্পাজম ,হাই
ব্লাড প্রেসার, বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যাবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।শিশুদের জন্য এটি সেবন যোগ্য নয়।
এটি ব্যবহারে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ কেন নিবেন?
অনেকেই আমরা এর ওর কোথা শুনে বিভিন্ন ঔষধ খেয়ে ফেলি।সকলের শরীর এক রকম নয়।এক এক
জনের শরীর বিভিন্ন ঔষুধ এর প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হতে পারে।বিভিন্ন নতুন
অসুখ দেহে বিস্তার লাভ করতে পারে ভুল ট্রিট্মেন্ট এবং ভুল ওষুধ খাবার ফলে।র্যাশ ,তক লালচে হয়ে যাওয়া,চুল ঝরে পড়া,মাথা ব্যাথা, বমি ভাব ,কিডনির উপর চাপ
ইত্যাদি হতে পারে।এজন্য আপনার উচিৎ একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে
তারপর ওষুধ খাওয়া।অনেকে বহুদিন ধরে একই ওষুধ খেয়ে থাকেন,এই অভ্যস্থতা ছাড়ুন,এতে
পরে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।আপনি যেই ওষুধই ব্যাবহার করুন না কেন অবশ্যই লেবেল পড়বেন মেয়াদ দেখে ও সঠিক
খুচরা মূল্য দেখে ওষুধ ক্রয় করবেন।
টাফনিল ট্যাবলেট সেবনের উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-শেষ কথা
আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে টাফনিলটা ট্যাবলেট সেবনের
উপকারিতা এবং এর বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবগত করতে পেরেছি। যে
কোন ট্যাবলেট সেবনের পূর্বেই তার সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়ে নেন এবং
রেজিস্টার্ড কৃত ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করবেন না। এছাড়াও মেয়াদ
উত্তীর্ণ তারিখ এবং সঠিক দামটা যাচাই করে তারপরে ওষুধ কিনবেন । এতক্ষণ সাথে
থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভবিষ্যতে আরো এমন ইনফরমেটিভ তথ্য পেতে আমার
ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url