কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৫
কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৫
আপনি কি কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে গুগুলে সার্চ
করেছেন?তাহলে পাঠক আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন।আজকের কন্টেন্ট টিতে
আমি কাঁকড়ার গুনাগুন ,এটির পুষ্টিমান এবং এটির উপকারীতা ও
আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বর্তমানে সিফুড হিসেবে কাঁকড়া চাহিদা এবং কাঁকড়ার চাষ, এছাড়া বিভিন্ন
রেস্টুরেন্টে এটি গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম
দের মধ্যে সি ফুড হিসেবে কাঁকড়া খাওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পেজ সূচিপত্রঃ
- কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
-
সিফুড হিসেবে কাঁকড়ার বর্তমানে চাহিদা
-
কাঁকড়ার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ
-
কোন ধরনের কাঁকড়া খাবার উপযোগী
-
এলার্জি জাতীয় সমস্যায় কাঁকড়া খাওয়া ঠিক হবে কিনা
-
বিভিন্ন রেসিপিতে কাঁকড়ার ব্যবহার
-
বর্তমানে কাঁকড়ার বাজার দর
-
কাঁকড়ার ভিতরে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে কিনা
-
আমাদের দেশে কাঁকড়ার বর্তমান চাহিদা
- কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৫-শেষ কথা
কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁকড়াতে রয়েছে মাংসের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি প্রোটিন। অপরদিকে কাঁকড়াতে
কানেক্টিভ টিস্যু থাকে না এজন্য সব বয়সের মানুষের জন্য এটি সহজ পাচ্য খাবার।
হজম করতে সুবিধা হয়। কাঁকড়াই বিদ্যমান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মানব দেহের
জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা কাঁকড়াতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান।
সামুদ্রিক মাছের যে সেলিনিয়াম থাকে তা সবচেয়ে বেশি পাওয়া
যায় কাঁকড়াতে। সেলিনিয়াম আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
এবং দেহে থাইরয়েড হরমোন এর পরিমাণ সঠিক রাখে।
কাঁকড়াতে প্রচুর পরিমাণ রিভোফ্লাবিন এবং ফসফরাস বিদ্যমান থাকে যা দেহে
ফসফরাসের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। কাঁকড়াতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম আমাদের
হাড় ও দাঁত মজবুত করে। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উপকারী কপার, ভিটামিন বি 2
এবং সেলিনিয়াম প্রচুর পরিমাণে আপনি পাবেন কাঁকড়ার ভিতরে। এটি
কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে আমাদের হার্টকে সুস্থ্য রাখে। দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ও ক্লিনিকাল যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করতে রাজ কাঁকড়ার নীল রক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে বর্তমানে। এর শরীরের পেছনে থাকা লেজ দিয়ে তৈরি হয় ক্যান্সারের ঔষধ।
অনেক সময় দেখা যায় আমাদের কিডনি দূর্বল হয়ে পড়ে কখনো কখনো অকেজো হয়ে পড়ে
কিংবা দূষিত হয়ে যায়। আর মজার ব্যাপার হলো কাঁকড়ার ভেতরে উপস্থিত বেশ কিছু
পদার্থ আমাদের দেহের সমস্ত দূষিত পদার্থ নিষ্কাশনের সহায়তা করে যার ফলে আমাদের
কিডনি সুস্থ্য থাকতে পারে। আমাদের দেহে রক্তকণিকা উৎপাদন এবং রক্ত সঞ্চালন
বৃদ্ধিতে কাঁকড়ার মাংসের জুড়ি নেই।
এছাড়াও দেহে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করতে কাঁকড়ার মাংস ভূমিকা
রাখে। আমাদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দেহকে সবল রাখতে
কাঁকড়ার মাংস হেল্প করে। আর্থাইটিস, আলজেইমারস, কার্ডিয়া ভাস্কুলার
ডিসিস সহ আরো বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার সহায়তা করে কাঁকড়ার মাংস।
কাঁকড়া যদি সঠিকভাবে রান্না করা না হয় এবং অধিক পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে বদহজমসহ পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাঁকড়াতে পারদের উপস্থিতি রয়েছে, যা স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা বা স্তন দানকারী মায়েদের জন্য এটি ক্ষতি করতে পারে। ফাস্টফুড হিসেবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে শিশুদেরকে বিরত রাখুন। আপনি যদি বাসি কাঁকড়া খেয়ে থাকেন তাহলে ফুড পয়জনিং অথবা বিষ্ক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কাঁকড়া রান্নার সময় অবশ্যই টাটকা ও সতেজ কাঁকড়া বেছে রান্না করবেন।
কাঁকড়া খাওয়ার ফলে দেহে তামা এবং জিঙ্কের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।স্বাস্থ্যের জন্য এটি ক্ষতিকর।আবার দেহে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেবে এতে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।আবার,যাদের
কিডনির সমস্যা থাকলে ফাস্ট ফুড হিসেবে অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করা উচিৎ।তাই,
আপনি কাঁকড়া খাওয়ার আগে অবশ্যই কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নেবেন।
সিফুড হিসেবে কাঁকড়ার বর্তমানে চাহিদা
বিশ্ববাজারে সিফুড হিসেবে কাঁকড়ার চাহিদা দিন দিন বেড়েই
চলেছে।সফটশেল কাঁকড়ার চাহিদা বাজারে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের জন্য একটি
সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য। চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কাঁকড়ার
চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কাঁকড়া চাষ একটি পরিবেশ বান্ধব ব্যবসা হতে পারে
।উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে কাঁকড়ার চাহিদা প্রচুর।
এই প্রোটিন সমৃদ্ধ এই খাবারে রয়েছে ভিটামিন বি টু ,বি ১২, সেলেনিয়াম এবং
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এছাড়াও রয়েছে রিবোফ্লাবিন , মিয়াসিন , আয়রন ,
ম্যাগনেসিয়াম , ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। আপনি জেনে অবাক হবেন যুক্তরাষ্ট্রের বড়
বড় ফুড সাইন্টিস্টরা বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ছাড়াও চিকিৎসার প্রয়োজনে
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণে কাঁকড়া খাবার উপদেশ দিয়ে থাকেন।
তবে আপনার যদি কোলেস্টেরলের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি থাকে অথবা কিডনি ফাংশন দুর্বল
তাদের খাদ্য তালিকায় কাঁকড়া রাখা উচিত নয়। আপনার যদি LDL কোলেস্টেরল হাই
না হয়ে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে কাঁকড়া খেতে পারেন।
কাঁকড়ার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ
কাঁকড়া একটি সুস্বাদু ও বহু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার. আমাদের দৈনন্দিন জীবনে
প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে কাঁকড়া খাওয়া যেতে পারে। কাকড়ায় বিভিন্ন ভিটামিন,
মিনারেল, ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি এসিড, জিংক ,ফসফরাস ইত্যাদি থেকে
থাকে।স্মৃতিভ্রংশ রোগের ঝুঁকি অনেক অংশে কমে থাকে ।এছাড়া আর্থাইটিস,
বিভিন্ন হৃদরোগ, রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের সাহায্য
করে। পেশী গঠনে কাঁকড়ার মাংস সাহায্য করে।
-
কাঁকড়া তে উপস্থিত সেলেনিয়াম দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ অনেক অংশ
বাড়িয়ে দেয় যার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।
-
এখানে উপস্থিত বি টু ভিটামিন দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় কার্যাবলীতে সাহায্য
করে। এর ফলে সহজে হজম হয় এবং অন্যান্য রোগ থেকে মুক্ত থাকে।
-
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগ এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
-
এখানে উপস্থিত জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এবং আয়রন
রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে।
- দাঁত ও হাড়ের গঠনে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সাহায্য করে।
- দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় ও শরীরের বিভিন্ন ক্লান্তি দূর করে
কোন ধরনের কাঁকড়া খাবার উপযোগী
বাংলাদেশে মিঠা ও লবণাক্ত পানি মিলে মোট ১৫ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে।
বিশ্ববাজারে কাঁকড়া রপ্তানিতে সবচেয়ে বড় দেশ হচ্ছে কানাডা এবং
রাশিয়া। কাকড়া উভচর বা সরীসৃপ প্রাণী নয়।
এটি ক্রাস্টেসিয়ান অর্থাৎ আধা-জলজ প্রাণী। এর ভিতর লবস্টার,
ক্রেফিস অন্তর্ভুক্ত।পোর্টুনাস ট্রিটিউবারকুলাটাস যা ঘোড়া কাঁকড়া হিসেবে
পরিচিত, এটি মূলত জাপানে নীল কাঁকড়া বা গাজামে কাঁকড়া হিসেবে পরিচিত।
অনেক ধরনের কাঁকড়া খাদ্য হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। এর মধ্যে নীল কাঁকড়া(Blue
Crab) ,স্পঞ্জ কাঁকড়া(Sponge Crab),মাড ক্র্যাব(Mud crab) সর্বাধিক জনপ্রিয়।
কিছু কিছু অঞ্চলে Soft-shell crab বেশ জনপ্রিয়। যে সমস্ত কাঁকড়া
আকার ছোট তারা সাধারণত সামুদ্রিক শৈবাল, প্লাংক্টন, ছোট ঝিনুক ইত্যাদি খেয়ে
থাকে। আর যেগুলো আকারে বিশাল সেগুলো অন্যান্য ছোট কাকড়া, স্কুইড, শামুক ও
অন্যান্য ছোট মাছ খেয়ে থাকে।poisonous crabs এ জাতীয় কাঁকড়া খুবই বিষাক্ত
হয়ে থাকে তাই এগুলো খাদ্য তালিকার ভিতরে আনা যাবে না। আলাস্কার রাজা
কাঁকড়া প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ যা খাদ্য হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।
বাজার থেকে কাকড়া কিনে আনার পর ফ্রিজে ৪/৫ ঘন্টা রেখে দিতে পারেন। এরপর জমে
যাওয়া কাঁকড়া বের করে কিছুক্ষন পানিতে রাখলে আপনি আরাম করে কাঁকড়া পরিষ্কার
করতে পারবেন। সাধারণত কাঁকড়া কেনার সময় অবশ্যই হাতে ওজন করে নিবেন যদি ভারি
হয় তাহলে সে সমস্ত কাঁকড়ায় শাস বেশি থাকে।পুরুষ কাঁকড়ার পা গুলা বেশ মোটা ও
শাস যুক্ত। পুরুষ কাঁকড়ার খোলসের নিচের দিকে ত্রিকোণ আকৃতির অংশ থাকে আর মেয়ে
কাঁকড়ার গুলো গোলাকার অংশ থাকে।হলুদ ঘিলু সদৃশ অংশ ফিমেল ক্র্যাব এর ভেতর আপনি
পেয়ে যাবেন। পুরুষ কাঁকড়া যদি আকার ছোট হয়ে থাকে তাহলে সেগুলোর ভিতর শাস
পাওয়া যাবে না ।তাই কাঁকড়া কেনার আগে অবশ্যই এই ব্যাপারটি মাথায় রাখবেন।
এলার্জি জাতীয় সমস্যায় কাঁকড়া খাওয়া ঠিক হবে কিনা
আমাদের একেক জনের শরীর বিশেষ বিশেষ জিনিসের প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল
যাকে আমরা অ্যালার্জি বলে থাকি। শেলফিশ জাতীয় খাবার হিসেবে কাঁকড়া
পরিচিত। যদি কারো কাঁকড়ায় অ্যালার্জি থেকে থাকে তাহলে এটি খাওয়ার সাথে সাথে
শরীরে বিভিন্ন রিঅ্যাকশন দেখা যেতে পারে। যেমন চুলকানি, শ্বাসকষ্ট,
কাশি,র্যাশ,স্কিন ডিসিস,বমি বমি ভাব ,ডায়রিয়া,দম বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
প্রতিক্রিয়া মৃদু থেকে তীব্রতার হতে পারে।অ্যানাফিল্যাক্সিস হতে পারে যা
জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ ,কারণ এর ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে।
তাই যাদের অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা রয়েছে তারা শেলফিশ বা বিভিন্ন সিফুড
খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।আমবাত, ত্বক
মাত্রাতিক্ত ফুলে যাওয়া ইত্যাদি অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে।যদি
আপনার শেলফিশ খাওয়ার পরে কোন রকমের অস্বাভাবিক বা বেশী মাত্রায় শারীরিক
প্রতিক্রিয়া যদি শরীরে অনুভূত হয় তবে এটি একটি শেলফিশ অ্যালার্জি হিসেবে গণ্য
হবে।
ক্রাস্টেসিয়ান শেলফিস পরিবারের মধ্যে (চিংড়ি ,কাকড়া
,লবস্টার) অন্তর্ভুক্ত আবার মোলাস্কস শেলফিস পরিবারের
মধ্যে(ঝিনুক , ওয়েস্টার , স্কুইড) অন্তর্ভুক্ত। কারো কারো ক্ষেত্রে এই দুই
শেলফিস জাতীয় খাদ্যের প্রতি সংবেদনশীলতা বা এলার্জি থাকতে পারে আবার কারো কারো
ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ক্রাস্টেসিয়ান সেলফিস গুলোর প্রতি এলার্জি থাকতে
পারে।স্ক্রিন প্রিক পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরের এলার্জি শনাক্ত করতে
পারেন। এবং সেটি বিবেচনায় রেখে আপনার খাদ্য তালিকা নির্বাচন করা উচিত।
বিভিন্ন রেসিপিতে কাঁকড়ার ব্যবহার
বাইরের দেশে জাপান,থাইল্যান্ড,তাইওয়ান,কানডা, চীন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সিফুড
হিসেবে কাঁকড়ার চাহিদা অনেক।প্রত্যেক দিন বিভিন্ন শেণী পেশার মানুষ ,স্টুডেন্ট
স্ট্রীট ফুড হিসেবে কাঁকড়া খেয়ে থাকেন।ক্র্যাব কেক,কাঁকড়ার টোস্ট,চিলি
ক্র্যাব,ফ্রায়েড ক্র্যাব, কাঁকড়ার সালাদ,স্যুপ,সাইড ডিস ,সিওপ্পিনো
ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের রেসেপি খেয়ে থাকেন।ঐতিহ্যবাহী ডিশ হিসেবেও এর জুড়ি নেই।
আমাদের দেশের মানুষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে কাঁকড়া রান্না করে থাকেন।আমাদের রেসিপি
গুলো অনেক বেশি মসলাদায়ক ও সুস্বাদু হয়ে থাকে।প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে
গ্রাম বাংলায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে কাঁকড়া রান্না করা হয়ে থাকে।কাঁকড়ার
মালাইকারি,কাঁকড়ার টক,কাঁকড়ার ঘিলুর ভর্তা,গরম ভাতের সাথে বিভিন্ন
পদ্ধতিতে রান্না কাঁকড়া পরিবেশন করা হয়।
বর্তমানে কাঁকড়ার বাজার দর
স্থান,ধরন ও আকারের উপর কাঁকড়ার দাম নির্ভর করে। আজকাল অনলাইনে
প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া সেল হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁকড়ার দাম সর্বনিম্ন ৩০০
থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।এছাড়া বেশ কিছু দোকানে
৪০০-৪৫০ টাকা কেজিতে কাঁকড়া বেচা হচ্ছে। নিচে আমি পুরুষ কাঁকড়া ও মহিলা
কাঁকড়ার বর্তমান বাজার রেট তুলে ধরলাম।
পুরুষ কাঁকড়া (ওজন) | দাম |
---|---|
90gm | 330tk |
170gm | 630tk |
270gm | 900tk |
370gm | 1000tk |
470gm | 1300tk |
মহিলা কাঁকড়া (ওজন) | দাম |
---|---|
100gm | 350tk |
130gm | 600tk |
160gm | 1000tk |
190gm | 1450tk |
চাহিদা অনুসারে কাঁকড়ার দাম কম বেশি হতে থাকবে।দেশের অন্যতম রপ্তানি যোগ্য পণ্য
এটি।কাঁকড়া ক্রয়ের সময় অবশ্যই হাত দিয়ে তুলে চেক করে নিবেন নাহলে আপনাকে মরা
কাঁকড়া গছিয়ে দিতে পারে।যেগুলো ওজনে ভারী সেগুলোতে শাস বেশি থাকবে ।তাই অবশ্যই
এসকল বিষয় মাথায় রেখে কাঁকড়া কিনবেন।
কাঁকড়ার ভিতরে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে কিনা
Acinetobacter baumannii এমন একটি ব্যাকটেরিয়া যেটা বিভিন্ন ধরনের
রোগজীবানুর সংক্রমন ঘটিয়ে থাকে।কার্বাপেনেম প্রতিরোধী (CRAB) সাধারণ
অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি কোনরূপ সাড়া দিয়ে থাকে না।বাউমিনি অত্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী একটি ব্যাক্টেরিয়া এবং এর খুব
কম বিকল্প রয়েছে।এছাড়াও কিছু কাঁকড়া এমনিতেই বিষাক্ত তাই এগুলো খাওয়া থেকে দূরে
থাকতে হবে। তাই, চাষ করা কাঁকড়া খাওয়াই বেশি উপকারী।কাঁকড়া অবশ্যই যত্ন সহকারে
ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন,তারপর রান্নার উপযুক্ত করে খাবেন।কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা ভালোমত জেনেই খাওয়া উচিৎ।
আমাদের দেশে কাঁকড়ার বর্তমান চাহিদা
বাংলাদেশে উপকূলবর্তী অঞ্চলে কাঁকড়া অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। দেশের
অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাঁকড়ার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম এই কাঁকড়া। আমাদের দেশে সফটশেল কাঁকড়ার
চাহিদাটা তুলনামূলকভাবে বেশি। খুলনা , বাগেরহাট , সাতক্ষীরা প্রভৃতি অঞ্চলে
কাঁকড়া চাষ হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চীন , মালয়েশিয়া , সিঙ্গাপুর
,জাপান ,হংকং , তাইওয়ান ,ইউরোপ ও আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশে কাঁকড়া
রপ্তানি করা হয় ।
কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৫-শেষ কথা
আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে কাঁকড়া খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে জানাতে পেরেছি।কাঁকড়া চাষ করে লক্ষ লক্ষ বেকার তরুন অর্থ
উপার্জন করতে পারেন এবং কাঁকড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মূল্য
ইনকাম করতে পারেন।রাজ কাঁকড়ার চাহিদা বর্তমানে অনেক।কাঁকড়ার রক্ত বিভিন্ন
ল্যাবে ও চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যাবহার হয়ে থাকে।ধানি জমিতেও কাঁকড়া ছাড়া হয় এগুলো
ফসল নষ্টকারী বিভিন্ন মাইট খেয়ে ফেলে ফসলকে রক্ষা করে।আমার কন্টেন্ট টি ভালো লেগে
থাকলে বেশি বেশি করে শেয়ার করুন যাতে করে আরো মানুষ উপকৃত হতে পারে।এতক্ষন সাথে
থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url